বুধবার, ২৫ ফেব্রুয়ারী, ২০১৫

লরেন্স অভ অ্যারাবিয়া আর বহুভাষাবিদ হামফ্রের সহায়তায় হঠাত করে দেশটা দখল করে নেয়।

আমরা ভুলে গেছি, বরং বলা উচিত, জানিই না যে, সৌদি শব্দটার মানে হল, একজন, মাত্র একজন মানুষ। আর সৌদি আরব মানে হল দুটা, মাত্র দুটা পরিবার- যারা বিবাহ সম্পর্কে সম্পর্কিত। মাত্র দুই তিনশ বছর আগেও যাদের না ছিল কোন শিক্ষা, না ছিল রাষ্ট্র পরিচালনার কোন অভিজ্ঞতা, না ছিল ধর্মে বিন্দুমাত্র গ্রহণযোগ্যতা। সেই পরিবার ব্রিটিশ সাম্রাজ্যের সহায়তায়, লরেন্স অভ অ্যারাবিয়া আর বহুভাষাবিদ হামফ্রের সহায়তায় হঠাত করে দেশটা দখল করে নেয়। এবং নিজের ইচ্ছানুযায়ী ধর্ম গঠন করে। ///
মুহাম্মদ বিন আব্দুল ওহহাব এর জন্মস্থান হচ্ছে উয়াইনা, যা বর্তমানে সৌদি আরবের নাজদ অঞ্চল হিসেবে পরিচিত।




source: http://www.somewhereinblog.net/blog/Qadri/29970751




লা-মাযহাবী, ওয়াহাবীদের প্রতিষ্ঠাতা গুরু মুহাম্মদ বিন আব্দিল ওয়াহাব নজদীর ব্রিটিশ এজেন্ট হওয়ার নেপথ্যে চাঞ্চল্যকর কাহিনীঃ (পর্ব ৩)

মুহাম্মদ বিন আব্দিল ওয়াহাব নজদী
লা-মাযহাবী, ওয়াহাবীদের প্রতিষ্ঠাতা গুরু মুহাম্মদ বিন আব্দিল ওয়াহাব নজদীর ব্রিটিশ এজেন্ট হওয়ার নেপথ্যে চাঞ্চল্যকর কাহিনীঃ (পর্ব ৩)

 
পর্ব- তিন
--------------------------------------

চার মাযহাব-
গুপ্তচর হেম্পার বলছে,
তাদের নবীর মৃত্যুর এক শতাব্দী পর সুন্নী মুসলিমদের চারজন স্কলার এ ব্যাপারে এগিয়ে এসেছিলেন। তারা ছিলেন, আবু হানিফা, আহমাদ বিন হাম্বাল, মালিক বিন আনাস, এবং মুহাম্মাদ বিন ইদ্রীস আশ শাফেয়ী। কয়েকজন খলীফা সুন্নীদেরকে চার স্কলারের যে কোন একজনকে অনুসরণ করার জন্য চাপ দিয়েছিলেন। তারা বলেছিলেন, এ চারজন স্কলার ছাড়া আর কেউ কোর'আন ও সুন্নাহ নিয়ে ইজতিহাদ করার যোগ্যতা রাখেন না। এই আন্দোলন মুসলমানদের জ্ঞান অর্জনের পথ বন্ধ করে দিয়েছিল। ইজতিহাদের উপর এমন নিষেধাজ্ঞাই মুলত ইসলামের অগ্রযাত্রাকে বন্ধ করে দিয়েছিল।
শিয়ারা সুন্নীদের এ বিষয়টিকে বিকৃত ভাবে উপস্থাপন করে চেষ্টা করেছিল নিজেদের ফেরকাকে আরও অধিকভাবে পরিচিত করে তোলার। সংখ্যার দিক বিচারে শিয়ারা সুন্নীদের দশ ভাগের এক ভাগ থেকেও কম ছিল। কিন্তু এখন তাদের সংখ্যা বৃদ্ধি পাচ্ছে,এমন কি তারা সুন্নীদের কাছাকাছি পৌঁছে যাচ্ছে।
ইজতিহাদ হচ্ছে অস্ত্রের ন্যায়। এটা কোর'আন ও সুন্নাহ কে বুঝার ক্ষেত্রে জ্ঞানের গভীর থেকে গভীরে পৌছতে সহায়তা করে। অপরদিকে, ইজতিহাদ নিসিদ্ধকরণ হচ্ছে মরচে ধরা অস্ত্রের ন্যায়। এ ধরণের উদ্যোগ মাযহাবকে একটি ফ্রেইম ওয়ার্কের মধ্যে সীমাবদ্ধ করে ফেলে।
আর হাঁ, যদি তোমার অস্ত্র দুর্বল হয়ে যায়, সন্দেহ নেই, তোমার দুশমন শক্তিশালী হয়ে যাবে। খুব শীঘ্রই অথবা অদূর ভবিষ্যতে দুশমনের মার খাবে।
আমি মনে করি, সুন্নীদের কেউ একজন হয়ত ভবিষ্যতে ইজতিহাদে দোয়ার খুলে দেবে। যদি তারা এটা না করে থাকে, তবে কয়েক শতাব্দীর মধ্যেই শিয়ারা সংখ্যায় সুন্নীদের ছাড়িয়ে অনেক দূর চলে যাবে।
অহংকারী যুবক মুহাম্মাদ বিন আব্দুল ওয়াহহাব নজদী কোর'আন হাদীসের ব্যখ্যায় আপন প্রবৃত্তির অনুসরণ করতো। ঊলামাদের মতামতকে সে সম্পূর্ণ ভাবে এড়িয়ে চলত। শুধু উলামাদের মতামত ই নয়, বরং সাহাবীদের মতামতকেও সে অগ্রাহ্য করতো, যেমন আবু বকর এবং উমর।
যখনই তার দৃষ্টিতে কোর'আনের কোন একটি আয়াতকে উলামাদের কথার বিরোধী মনে হত। তখন ই সে বলত, নবী বলেছেন, আমি তোমাদের জন্য কোর'আন এবং সুন্নাহ রেখে গেলাম। তিনিতো বলেন নি, আমি তোমাদের জন্য কোর'আন, সুন্নাহ, সাহাবা, এবং মাযহাবের ইমামদেরকে রেখে যাচ্ছি।

মুহাম্মাদ বিন আব্দুল ওয়াহহাব নজদী নামের যুবকটি খুবই রূঢ় প্রকৃতির ছিল। অল্পতেই উত্তেজিত হয়ে যেত। বিশেষ করে অটোমান সরকারকে বেশীর ভাগ সময় খুচিয়ে খুচিয়ে কথা বলত, তবে ইরান সরকার নিয়ে সে কোন বাজে মন্তব্য করতোনা।
আমার দোকানের মালিকের সাথে তার উঠাবসা ছিল একটি মাত্র কারণে, আর তা হচ্ছে, তারা দুজনেই ইস্তাম্বুলের খলীফা সম্পর্কে বিরূপ ধারণা পোষণ করত। কিন্তু এটা কীভাবে সম্ভব যে, মুহাম্মাদ বিন আব্দুল ওয়াহহাব নজদীর মত সুন্নী লোক আব্দুর রিদার মত শিয়ার সাথে বন্ধুত্ব করেছিল? মূলত এ শহরে সুন্নীরা বন্ধুভাবাপন্ন হবার ভান করত, এমন কি শিয়াদের সাথে ভাই ভাই সম্পর্কও গড়ে তোলত। শহরটির বেশীর ভাগ অধিবাসীরা আরবী, ফার্সি এবং তুর্কী ভাষা জানতো।
মুহাম্মাদ বিন আব্দুল ওয়াহহাব নজদী লোকটি বাহ্যিকভাবে সুন্নী ছিল। যদিও সুন্নীরা শিয়াদের সমালোচনা করে। বলে, এরা অমুসলিম। কিন্তু এই লোকটি কখনও শিয়াদেরকে নিয়ে বাজে ,মন্তব্য করতনা।
নজদের মুহাম্মাদ বলত, চার মাযহাবের কোন একটিকে মেনে চলা- এটা কোন সুন্নী করতে পারেনা। এটা অযৌক্তিক। সে বলত, আল্লাহ তো কোর'আনে মাযহাব অনুসরণ করতে বলেন নাই। কোন প্রমাণ নেই।
এ লোকটি উদ্দেশ্যজনকভাবে বিষয়ভিত্তিক কোর'আনের আয়াত এবং হাদীসগুলোকে এড়িয়ে যেত।

আব্দুর রিদার দোকান।
মুহাম্মাদ নজদী আলোচনা করছে একজন মেহমানের সাথে। নাম শায়েখ যাওয়াদ। কুম থেকে আসা এক শিয়া স্কলার।
যাওয়াদঃ " তুমি যখন মনে কর যে আলী একজন মুজতাহিদ ছিলেন, তাহলে শিয়াদের ন্যায় তাকে অনুসরণ করছনা কেন?"
মুহাম্মাদ নজদীঃ "উমার এবং অন্যান্য সাহাবা থেকে আলী ব্যতিক্রম নন। তার কোন কথা দলীল হতে পারেনা। কোর'আন এবং সুন্নাহ ই হচ্ছে একমাত্র দলীল।"
(কিন্তু প্রকৃত সত্য হচ্ছে, যে কোন সাহাবীর স্টেটমেন্ট দলীল হিসেবে বিবেচিত হয়, রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম আমাদেরকে সাহাবীদেরকে অনুসরণ করতে বলেছেন, কিন্তু মুহাম্মাদ নজদী এটা অস্বীকার করেছেন, আজ তাদের অনুসারীরা এরকম ই সাহাবীদের কাজকে অস্বীকার করে। এটা আর কিছু নয়, তাদেরই নেতার আদর্শ তারা অনুসরণ করছে, তা আর বলার অপেক্ষা রাখে না)।
যাওয়াদঃ "যেহেতু আমাদের নবী বলেছেন, আমি জ্ঞানের শহর আর আলী হচ্ছেন তার দরজা। এটা কি প্রমাণ করে না যে আলী অন্যান্য সাহাবা থেকে ভিন্ন?"
মুহাম্মাদ নজদীঃ "শুনুন, যদি আলীর কথা দলীল হত, তবে নবী এভাবে বলতেন, আমি কোর'আন সুন্নাহ এবং আলীকে রেখে গেলাম। কিন্তু তিনি কি এভাবে বলেছেন?"
যাওয়াদঃ "হাঁ, আমরা মনে করি, তিনি তা বলেছেন। তিনি বলেছেন, 'আমি কোর'আন কারীম রেখে গেলাম এবং আমার আহলে বাইতকে রেখে গেলাম।' আর আলী হচ্ছেন আহলে বাইতের একজন গুরুত্বপূর্ণ সদস্য।"
মুহাম্মাদ নজদী এটা অস্বীকার করে বলল, নাহ, নবী এমন কথা বলেন নি।
যাওয়াদ বিভিন্ন ডকুমেন্ট দিয়ে তার কথা ভুল প্রমাণিত করল।
যাই হোক, মুহাম্মাদ নজদী কিন্তু যাওয়াদের কথা মেনে নিতে পারলনা।
বলল,,
"তুমি বলছ, নবী এটা বলেছেন, এটা যদি সত্যি হয়, তাহলে নবীর সুন্নাহ বলতে আর কী থাকলো?"
যাওয়াদঃ "নবীর সুন্নাহ হচ্ছে কোর'আনের ব্যাখ্যা। সুতরাং নবীর বাণী, "আমি কিতাবুল্লাহ এবং আমার আহলে বাইতকে রেখে গেলাম" এখানে আল্লাহর কিতাবের মধ্যে সুন্নাহ অন্তর্ভুক্ত।"
আমি এ আলোচনাকে খুব ই উপভোগ করলাম। যাওয়াদের সামনে মুহাম্মাদ নজদীকে অত্যন্ত গতিহীন ও অসহায় মনে হল, যেমন শিকারীর হাতে অসহায় থাকে চড়ুই পাখির বাসা।

মুহাম্মাদ বিন আব্দুল ওয়াহহাব নজদীর মত এমন এক লোকের সন্ধান ই আমি করছিলাম। কারণ এ লোকটি উলামাদেরকে দু চোখে দেখতে পারত না।
তাকে আমার শিকার বানানোর কারণ হল, সে স্বাধীন ভাবে কোর'আন হাদীস বুঝতে চায়। সে তার নিজস্ব মতামতকেই যথেষ্ট মনে করত।
মুহাম্মাদ নজদী আহমেদ ইফেন্দী (যিনি আমাকে ইস্তাম্বুলে শিক্ষা দিয়েছিলেন) থেকে সম্পূর্ণ ভিন্ন ধাঁচের ছিল। মুহাম্মাদ ইফেন্দী পাহাড়ের ন্যায় অটল ছিলেন। কোন শক্তি ছিলনা তাকে টলানোর। তিনি যখন আবু হানিফার নাম নিতেন, তার পূর্বে তিনি অযু করে নিতেন। যখনই তিনি বুখারী নামক হাদীস গ্রন্থ হাতে নিতেন, তার পূর্বে তিনি অযু করতেন।
সুন্নীরা এ গ্রন্থকে ভীষণ শ্রদ্ধা করে।
নজদের মুহাম্মাদ ছিল তাঁর ঠিক উল্টো। সে আবু হানিফাকে নিয়ে ঘৃণাভরে কথা বলত। সে বলত, আবু হানিফা কী জানত? আমি তার থেকে বেশী জানি। সে বলত, বুখারীর অর্ধেক হাদীসের ক্ষেত্রে অনেক ভুল আছে।
আমি তার সাথে গভীর সম্পর্ক গড়ে তোললাম। যেখানে সেখানে তার প্রশংসা করতে শুরু করলাম।
আমি তাকে বললাম,
"মুহাম্মাদ, তুমি উমর এবং আলি থেকে ও মহান। নবী যদি এখন বেঁচে থাকতেন, তাহলে তাদের পরিবর্তে তোমাকে ই তিনি খলীফা বানাতেন।আমি আশা করি, তোমার হাত ধরেই ইসলামের নব জাগরন আসবে। তুমি ই হচ্ছ একমাত্র স্কলার যে কিনা সারা দুনিয়ায় ইসলাম প্রচার করতে সফলভাবে সক্ষম।"
শলা-পরামর্শ হয়ে গেল।
আমরা সিদ্ধান্ত নিলাম, কোরআন হাদীসের নুতন ব্যাখ্যা দিতে হবে। এবং এ নতুন ব্যাখ্যায় থাকবে আমাদের নিজস্ব চিন্তা চেতনা ও মতামতের প্রতিফলন। যে ব্যাখ্যার সাথে সাহাবাদের কথার মিল থাকবে না, চার মাযহাবের ইমাম দের কথার মিল থাকবেনা। মুফাসসির ও মুহাদ্দিস গণের ব্যখ্যার মিল থাকবে না। (মুফাসসির বলা হয় তাকে যে গভীর জ্ঞান দ্বারা কোর'আনের ব্যাখ্যা দিয়ে থাকেন, এবং মুহাদ্দিস হচ্ছেন তিনি যিনি গভীর জ্ঞান দ্বারা হাদীসের ব্যাখ্যা দিয়ে থাকেন)।
আমরা কোর'আন পড়া শুরু করলাম, এবং কতিপয় আয়াত নিয়ে ধীরে ধীরে আলোচনা-পর্যালোচনা করা শুরু করলাম।
একজন ঝানু গুপ্তচর হিসেবে মুহাম্মাদ বিন আব্দুল ওয়াহহাব নজদীকে বিভ্রান্ত করার প্রথম পদক্ষেপ নিয়ে নিলাম।

মুহাম্মাদ বিন আব্দুল ওয়াহহাব নজদী। চেষ্টা করছিল একজন বিপ্লবী হিসেবে নিজেকে তোলে ধরার। আর সে জন্যই সে আমার চিন্তা ও পরিকল্পনাকে আনন্দের সাথে গ্রহণ করেছিল।
কোন এক দিন।
আমি তাকে বললাম,
"দেখ, মুহাম্মাদ, জিহাদ তো ফরয নয়।"
মুহাম্মাদ বলল,
"কেন? আল্লাহ বলেননি, তোমরা অবিশ্বাসীদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ কর?"
আমি বললাম,
" তাহলে বল দেখি, আল্লাহর নির্দেশ সত্ত্বেও নবী কেন মুনাফিকদের বিরুদ্ধে জিহাদ করেননি? আল্লাহ তো বলেছেন, 'অবিশ্বাসী এবং মুনাফিকদের বিরুদ্ধে জিহাদ কর'।"
সে বলল,
"নবী তো তাদের বিরুদ্ধে কথা দ্বারা জিহাদ করেছেন।"
আমি বললাম,
"আল্লাহ ফরয করেছেন এমন জিহাদ কি শুধু মাত্র কথা দ্বারা ই আদায় হয়ে যায়?"
সে বলল,
"রাসুলুল্লাহ তো অবিশ্বাসীদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করেছেন।"
আমি বললাম,
দেখ, মুহাম্মাদ, নবী তো অবিশ্বাসীদের সাথে জিহাদ করেছেন আত্মরক্ষার জন্য। কারণ তারা তাঁকে হত্যা করতে চেয়েছিল।"
সে মাথা নাড়াল।
অন্য এক দিন।
'আমি তাকে বললাম,
"মুত'আহ বিয়ে করা তো জায়েয আছে।"
সে বলল,
"নাহ, এটা জায়েয নয়।"
আমি বললাম,
"আল্লাহ তো কোর'আনে বলেছেন, তোমরা যদি তাদেরকে ভোগ করতে চাও তো তাদেরকে আরোপকৃত মোহর দিয়ে দাও।"
সে বলল,
"উমর তো তাঁর সময়ে ঘটে যাওয়া দুটি মুত'আহ বিয়ে নিষিদ্ধ করেছিলেন এবং বলেছিলেন,যে মুত'আহ বিয়ে করবে, তাকে শাস্তি দেয়া হবে।"
আমি বললাম,
"দেখ মুহাম্মাদ, উমর এটা নিষেধ করেছেন অথচ তিনি জানতেন যে নবী এমন বিয়ের অনুমতি দিয়েছেন। এখন তুমি ই বল, যেখানে নবী নিজেই অনুমতি দিয়েছেন, সেখানে তাঁর কথা অগ্রাহ্য করে তুমি উমরের কথা কেন গ্রহণ করবে?"
মুহাম্মাদ বিন আব্দুল ওয়াহহাব নজদী নিরত্তোর। কোন জবাব আসল না। বুঝে নিলাম, শিকার ধরা পড়েছে।
চলবে-

ref: https://www.facebook.com/photo.php?fbid=399135623602496&set=a.260763954106331.1073741827.100005181848831&type=1&permPage=1

লা-মাযহাবী, ওয়াহাবীদের প্রতিষ্ঠাতা গুরু মুহাম্মদ বিন আব্দিল ওয়াহাব নজদীর ব্রিটিশ এজেন্ট হওয়ার নেপথ্যে চাঞ্চল্যকর কাহিনীঃ (পর্ব ২)


 মুহাম্মদ বিন আব্দিল ওয়াহাব নজদী
লা-মাযহাবী, ওয়াহাবীদের প্রতিষ্ঠাতা গুরু মুহাম্মদ বিন আব্দিল ওয়াহাব নজদীর ব্রিটিশ এজেন্ট হওয়ার নেপথ্যে চাঞ্চল্যকর কাহিনীঃ (পর্ব ২)

লামাযহাবীদের শায়েখ তাহলে ব্রিটিশদের লেলিয়ে দেয়া ভয়ংকর এজেন্ট!!!!!!
কীভাবে?
গুপ্তচর নিজেই এ চাঞ্চল্যকর তথ্য ফাঁস করেছে তার confessions of a British spy Hamper নামক আর্টিকেলে। এখানে আর্টিকেলটির সম্পূর্ণ হুবহু অনুবাদ না করা হলেও প্রাসঙ্গিক মূল বিষয়গুলো যথাযথভাবে তোলে ধরার চেস্টা করা হয়েছে।
জানতে হলে শুধু এক পর্ব পড়লেই হবেনা। সবগুলো পড়তে হবে।
তাই, আমাদের সাথে থাকুন, পড়ুন, শেয়ার করে অন্য ভাইকে জানতে দিন। সিরিয়াস।
______________________________________________________

পর্ব- দুই
--------------------------------------

গুপ্তচর হেম্পার বলছে,
ঘাম ঝরানো ভ্রমণ শেষে আমি ইস্তাম্বুল এসে পৌঁছলাম। সবাইকে আমার নাম বললাম, মুহাম্মাদ।মসজিদে যাওয়া আসা শুরু করলাম। মুসলমানদের নিয়মানুবর্তিতা, পরিচ্ছন্নতা, এবং মান্যতা- এ গুণগুলো আমি সত্যিই পছন্দ করতাম।
কয়েক মুহূর্তের জন্য আমার নিজেকে প্রশ্ন করলাম, আমরা কেন এ সকল ইনোসেন্ট লোকদের সাথে ফাইট করছি? এটাই কি লর্ড জীসাস মেসায়াহ আমাদেরকে শিক্ষা দিয়েছেন?
কিন্তু সেটা ছিল কয়েক মুহূর্তের জন্য। খুব দ্রুতগতিতে অর্পিত কর্তব্যবোধ আমার মধ্যে জেগে উঠল। সিদ্ধান্ত নিলাম, আমার ডিউটি আমি পালন করবই।
ইস্তাম্বুলে আমি একজন বৃদ্ধ স্কলারের সাথে সাক্ষাত করলাম। নাম, আহমেদ ইফেন্দী। দীল খোলা মানুষ, আধ্যাত্মিকতা এবং পরোপকারীতার গুণাবলী সম্পন্ন এক লোক, আমার ধর্মে তাঁর ন্যায় একজন ভাল মানুষ কাউকে দেখিনি। এইলোক দিন রাত চেস্টা করছিল, নিজেকে নবী মুহাম্মাদের ন্যায় গড়ে তোলবে। তাঁর মতে, মুহাম্মাদ ছিলেন এক মহান এবং উৎকৃষ্ট মানুষ। যখনই লোকটি মুহাম্মাদের নাম নিত, তাঁর দু চোখ ভিজে যেত।
আমার ভাগ্য ভাল, সে আমাকে জিজ্ঞাসা করে নাই, আমি কে? কোথা থেকে এসেছি? সে আমাকে মুহাম্মাদ ইফেন্দী বলে ডাকতো। আমার সকল প্রশ্নের জবাব সে ধৈর্যের সাথে দিত, কারণ তাঁর ধারণা ছিল, আমি একজন মেহমান, ইস্তাম্বুলে কাজ করতে এসেছি, খলীফার অধীনে।
একদিন আমি আহমেদ ইফেন্দীকে বললাম, আমার মা বাবা তো মরে গেছে। আমার কোন ভাই বোন নেই। উত্তরাধিকার সুত্রে আমার কোন সম্পত্তি ও নেই। আমি ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করেছিলাম কোর'আন এবং সুন্নাহ শিক্ষা লাভ করতে এবং একটি কর্মময় জীবন যাপন করতে, যাতে ইহ ও পরকালে সফল হওয়া যায়।
আমার কথা শুনে সে খুবই আনন্দিত হল এবং বলল, "তোমাকে মুল্যায়ন ও সম্মান করা যায় তিনটি কারণে," আমি তখন লিখতে শুরু করলাম,
১-তুমি একজন মুসলমান, আর সকল মুসলমান ভাই ভাই।
২- তুমি একজন মেহমান। আর রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, মেহমানকে আপ্যায়ন কর।
৩- তুমি কাজ করতে চাও। আর হাদীসে আছে, যে লোক কাজ করে, সে আল্লাহর নিকট প্রিয়।
কথাগুলো আমাকে খুবই আনন্দিত করল।

তাঁর কথাগুলো আমাকে খুবই আনন্দিত করল। আমি নিজেকে বললাম, এমন উজ্জ্বল সত্য কি খ্রিস্টান ধর্মে আছে? এটা লজ্জার বিষয় যে, এমন একটি দৃষ্টান্তও খ্রিস্টান ধর্মে নেই।
আমি আহমেদ ইফেন্দীকে বললাম, আমি কোর'আন শিখতে চাই।
তিনি জানালেন, তিনি আনন্দের সাথেই তা করবেন। তিনি সুরা ফাতেহা অর্থ সহ ব্যাখা সহকারে শিক্ষা দেয়া শুরু করলেন। দুই বৎসরে আমি পুরো কোর'আন পড়ে ফেললাম। প্রতিটি লেসনের আগে তিনি নিজে অযু করতেন এবং আমাকেও অযু করতে বলতেন। তিনি কিবলাহর দিকে মুখ করে বসতেন এবং টিচিং শুরু করতেন।
মুসলমানরা যেটাকে অযু বলে, সেটা হচ্ছে ধারাবাহিক ওয়াশিং, যেমন,
মুখ ধৌত করা
ডান হাত আংগুল থেকে কবজি পর্যন্ত ধৌত করা
বাম হাত আংগুল থেকে কবজি পর্যন্ত ধৌত করা
মাথা মাসেহ করা
উভয় পা ধৌত করা
মিসওয়াক করাটা আমার কাছে বড়ই বিরক্তিকর ছিল। মিসওয়াক হচ্ছে গাছের ডাল, যা দ্বারা মুসলমানগণ দাঁত সহ মুখের ভিতর পরিস্কার করে। আমি মনে করতাম, এ রকম গাছের একটি ডাল মুখ এবং দাঁতের জন্য ক্ষতিকর। মাঝে মধ্যে এটা করতে গিয়ে আমি দাঁতে আঘাত করে ফেলতাম, ফলে রক্ত বেরিয়ে আসতো। তারপর ও আমাকে এটা করতে হয়েছিল, কারণ মুসলমানগণ এটাকে তাদের রাসুলের মুয়াক্কাদ সুন্নত বলতো। তারা বলতো, এ কাঠের টুকরো খুবই উপকারী। সত্যিই, একদিন আমার মুখ থেকে রক্ত বেরিয়ে আসা বন্ধ হয়ে গেল এবং ব্রিটিশদের মুখে এক ধরণের ফাউল গন্ধ থাকে যেটা আমার ও ছিল- এটাও চলে গেল।

ইস্তাম্বুলে অবস্থানকালীন সময় রাতের বেলা আমি একটি রুমে থাকতাম। রুমটি একটি মসজিদের একজন খাদেমের কাছ থেকে ভাড়া নিয়েছিলাম। খাদেমের নাম ছিল, মারওয়ান ইফেন্দী। মারওয়ান হচ্ছে নবী মুহাম্মাদের সাথীদের একজনের নাম। খাদেম লোকটির স্নায়ুতন্ত্র খুবই দুর্বল ছিল, অল্পতেই উত্তেজিত হয়ে পড়ত। সে তার নাম নিয়ে গর্ব করত এবং বলত, ভবিষ্যতে আমার কোন ছেলে হলে তার নাম রাখব মারওয়ান, কারণ মারওয়ান হচ্ছেন ইসলামের বীর যুদ্ধাদের একজন।
মারওয়ান ইফেন্দী রাতের খাবার বানাতো। আমি শুক্রবার কাজে যেতাম না। শুক্রবার হচ্ছে মুসলমানদের হলি ডে। আর সপ্তাহের অন্যান্য দিন আমি এক কাঠমিস্ত্রীর সাথে কাজ করতাম। তাঁর নাম ছিল, খালিদ। পেমেন্ট ছিল সাপ্তাহিক। আমি কাজ করতাম পার্ট টাইম। সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত। এই কাঠমিস্ত্রী অবসর সময়ের বেশীর ভাগ সময় খালেদ বিন ওয়ালীদের গুণকীর্তন করত। খালিদ বিন ওয়ালীদ ছিলেন ইসলামের একজন বীর সেনাপতি। অনেক যুদ্ধে জয়লাভ করেছেন। কিন্তু উমার বিন খাত্তাবের চিটি এবং খালিদ বিন ওয়ালীদের সেনাপতির পদ থেকে অপসারনের ঘটনাটি যখন সে বলত, তখন তার চেহারা বিরক্তিতে ভরে যেত।
খালিদ নামের মিস্ত্রীটা কিন্তু বড্ড পাঁজি টাইপের ছিল। তবে কোন কারণে সে আমাকে খুবই বিশ্বাস করত। হয়তঃ তার কথা অক্ষরে অক্ষরে মেনে চলতাম বলে। সে ইসলামী শরীয়ত এড়িয়ে চলত। কিন্তু যখন সে তার বন্ধুদের সাথে থাকত, তখন শরীয়তের কথা বলতে বলতে মুখে ফেনা তোলতো। সে শুক্রবারের নামাজে যেত, তবে অন্যান্য দিনের নামাজের ব্যাপারে আমি নিশ্চিত নই।
আমি সকালের নাশতা দোকানেই করতাম। কাজ শেষ করে আমি মসজিদে যেতাম। জোহরের নামাজ পড়তাম। আছর পর্যন্ত অপেক্ষা করতাম। আছরের নামাজ পড়ে আহমেদ ইফেন্দির বাসায় যেতাম। তিনি আমাকে কোর'আন পড়াতেন, আরবী এবং তুর্কী ভাষা শিক্ষা দিতেন। সময় দিতেন দু'ঘন্টা। প্রতি শুক্রবার আমি আমার সাপ্তাহিক ইনকামের টাকা তাঁকে দিয়ে দিতাম, কারণ তিনি আমাকে খুব ভাল পড়াতেন। সত্যি ই তিনি আমাকে শিখিয়েছিলেন, কীভাবে কোর'আন পড়তে হয়, তিনি শিখিয়েছিলেন আরবী ও তুর্কী ভাষা সহ ইসলাম ধর্মের প্রয়োজনীয় বিষয়াদি।
আহমেদ ইফেন্দী জানতে পারলেন, আমি অবিবাহিত। তিনি আমার নিকট তাঁর একটি মেয়েকে বিয়ে দিতে চাইলেন। আমি অস্বীকৃতি জানালাম। তিনি আমাকে উৎসাহিত করলেন। বলেন, বিবাহ হচ্ছে নবীর সুন্নত। নবী বলেছেন,যে আমার সুন্নত থেকে মুখ ফিরিয়ে নেয়, সে আমার দলভুক্ত নয়। আমি তাকে মিথ্যা বললাম, দেখুন, আমার ঐ-----পাওয়ার নেই। (পাঠক, বুঝে নিন)। তিনি থামলেন। আর এভাবেই ইস্তাম্বুলে আমি আমার পরিচিতি ও বন্ধুত্ব বজায় রাখতে থাকলাম।

ইস্তাম্বুলে আমার যখন দু বৎসর পূর্ণ হল, আমি আহমেদ ইফেন্দীকে বললাম, আমি বাড়ী ফিরে যেতে চাই। তিনি বললেন, না, যেওনা। কেন যেতে চাচ্ছ? তুমি যা চাচ্ছ, ইস্তাম্বুলে তা তুমি পেতে পার। আল্লাহ এই শহরে ধর্ম এবং জাগতিক সব কিছু একই সময়ে দিয়েছেন। তুমি বলেছ যে তোমার বাবা মা মারা গেছে। তোমার কোন ভাই বোন নেই। তাহলে কেন তুমি ইস্তাম্বুলে স্থায়ীভাবে বাস করছনা? আহমেদ ইফেন্দী আমার উপর এক ধরণের 'বাধ্যতামুলক নিরভরশীলতা' ফর্ম করেছিলেন। যার কারণে তিনি আমার সঙ্গ ত্যাগ করতে চাননি। তিনি আমাকে ইস্তাম্বুলে বাড়ি নির্মাণে উৎসাহিত করেছিলেন। কিন্তু ইস্তাম্বুল সম্পর্কে পুরো রিপোর্ট প্রদান এবং নুতন নির্দেশের জন্য আমার দায়িত্ববোধ আমাকে লন্ডনে ফিরে বাধ্য করেছিল।
ইস্তাম্বুলে থাকাকালীন সময় প্রতি মাসে আমি পর্যবেক্ষণ রিপোর্ট মিনিস্ট্রিতে পাঠাতাম। আমার মনে পড়ছে, আমাকে বলা হয়েছিল লক্ষ্য পূরণে প্রয়োজনে সমকামিতা প্রাকটিস করতে। ইংল্যান্ডে এটা অহরহ হয়ে থাকে। আসমান ভেঙ্গে আমার মাথার উপর পড়েছিল। কারন, আমার জীবনে এটা কখনও ঘটেনি। কিন্তু আমার বসেরা এটার জন্য কমান্ড করল। আমি বাধ্য হলাম এমন কাজ করতে।
আহমেদ ইফেন্দীকে বিদায় জানালাম। দু চোখ তাঁর অশ্রু সিক্ত হয়ে গেল। তিনি বললেন, ছেলে আমার, আল্লাহ তোমার সাথী হোন। যদি কখনও ইস্তাম্বুল ফিরে আস আর আমাকে মৃত দেখতে পাও, আমাকে স্মরণ করিও। আমার আত্মার মাগফিরাতের জন্য সুরা ফাতিহা পড়িও। হাশরের ময়দানে রাসুলের সম্মুখে আমাদের মিলন হবে।
সত্যি ই আমি একধরণের বেদনা অনুভব করলাম, আর এটা এতই প্রবল ছিল যে আমি কান্না ধরে রাখতে পারলাম না।
তবে আর যাই হোক, আমার দায়িত্ববোধ ছিল বরাবরই শক্তিশালী।
আমার পূর্বে আমার বন্ধুরা লন্ডনে পৌঁছে গেল। আমাদের সবাইকে নুতন নির্দেশনা দেয়া হল। তবে দুর্ভাগ্যজনকভাবে আমাদের মাত্র ছয় জন ফিরে আসতে পেরেছিল।
সেক্রেটারী জানালেন, আমাদের বাকী চারজনের একজন মিশরে মুসলমান হয়ে গিয়েছিল। তবু তিনি আনন্দিত ছিলেন এ জন্য যে, সে কোন গোপনীয়তা ফাঁস করেনি। দ্বিতীয়জন রাশিয়ায় গিয়েছিল, সে সেখানেই থেকে গিয়েছিল, ফিরে আসেনি। সে একজন রাশিয়ান ছিল। তৃতীয় জন প্লেগে মারা গিয়েছিল। সে তখন বাগদাদের ইমারা শহরে ছিল। চতুর্থ জন ইয়ামেনে ছিল এবং এক বৎসর পর্যন্ত মিনিস্ট্রি তাঁর কাছ থেকে রিপোর্ট রিসিভ করেছিল। এরপর থেকে অনেক চেস্টা করেও তাঁর আর কোন সন্ধান পাওয়া যাচ্ছিলনা।
মিনিস্ট্রি এ চারজনের ঘটনাকে আকস্মিক দুর্ঘটনা হিসেবেই ধরে নিয়েছিল।

সেক্রেটারী মিটিং ডাকলেন। আমাদের রিপোর্ট গুলো আনা হল। তারা আমার রিপোর্ট থেকে কিছু নোট নিলেন। মিনিস্টার, সেক্রেটারী, আরো যারা ছিলেন সবাই আমার কাজের প্রশংসা করলেন।
আমি কুর'আন, শরিয়ত, তুর্কী এবং আরবী ভাষা শিক্ষায় সন্দেহাতীতভাবে সফল হয়েছিলাম। তবুও আমি অটোমান এম্পায়ারের দুর্বল দিক গুলো নিয়ে রিপোর্ট পেশ করতে অক্ষম হলাম। দু চারটি মিটিং এর পর সেক্রেটারী আমাকে ব্যর্থতা নিয়ে প্রশ্ন করলেন। আমি বললাম, আমার প্রধান কাজ ছিল, কোর'আন, শরিয়ত এবং ভাষা শিক্ষা। তাই অন্য কোন বিষয়ে সময় দিতে পারিনি। তবে এখন আমি আপনাকে খুশি করতে পারি, যদি আমাকে বিশ্বাস করেন।
সেক্রেটারী বললেন,
হেম্পার, তোমার পরবর্তী মিশনে দুটি কাজ রয়েছেঃ
১- মুসলমা্বদের দুর্বলতার দিক খুঁজে বের করা, যাতে আমরা তাদের দেহের ভিতরে ঢুকে দেহের প্রতিটি জোড়া বিচ্ছিন্ন করে দিতে পারি। প্রকৃতপক্ষে, এটাই হচ্ছে, শত্রুকে আক্রমণ করার উত্তম পন্থা।
২- যখন ই তুমি এই দিক গুলো খুঁজে বের করবে এবং আমার দিক নির্দেশনা অনুযায়ী তাদের একে অপরের মধ্যে দ্বন্দ্ব লাগিয়ে দেবেদেশনই তুমি একজন সফল এজেন্ট হিসেবে বিবেচিত হবে। আর মিনিস্ট্রী থেকে তুমি মেডেল অর্জন করবে।
আমি্দেশপর লন্ডনে ছয় মাস ছিলাম। চাচাতো বোন মারিয়াকে বিয়ে করলাম। আমার বয়স তখন ২২ বছর আর সে ছিল ২৩ বছরের যুবতী। মারিয়া ছিল খুব ই সুন্দরী, বুদ্ধিমতি এবং সংস্কৃতিমনা। তার সাথে কাটানো দিনগুলোই ছিল আমার জীবনের সবচে' সুন্দর সময়।
মারিয়া তখন প্রেগ্নেন্ট। নুতন মেহমানের অপেক্ষায় আমরা দিন গুণছিলাম। এমন সময় সংবাদ আসল, আমাকে ইরাক যেতে হবে।
আদেশনামাটি পেয়ে আমার মন ব্যথায় অস্থির হয়ে উঠল।

যাই হোক, দেশের গুরুত্বের কথা বিবেচনা এবং সহকর্মীদের মধ্যে শ্রেষ্ঠ হবার বাসনা স্বামিত্ব এবং পিতৃত্বের চেয়ে অনেক বড় ছিল বিধায় দ্বিধাহীন চিত্তে কাজটি গ্রহণ করলাম। আমার স্ত্রী চেয়েছিল বাচ্চাটির জন্মের পর পর্যন্ত মিশন স্থগিত করতে। আমি সেটা উপেক্ষা করলাম। বিদায় বেলায় আমরা উভয়ে ই কাঁদলাম। আমার স্ত্রী বলল, চিটি লিখবে কিন্তু। স্বর্ণের ন্যায় মুল্যবান আমাদের নুতন বাড়ি খানা নিয়ে আমি তোমাকে চিটি লিখব। তার কথাগুলো আমার অন্তরে এমন ঢেউ তোলেছিল যে আমি মিশনটি বাদ দিতে যাচ্ছিলাম। অনেক কষ্ট করে নিজের আবেগকে কন্ট্রল করলাম। বিদায় জানিয়ে চূড়ান্ত নির্দেশনার জন্য আমি মিনিস্ট্রীতে গিয়ে পৌঁছলাম।
ছয় মাস পর আমি নিজেকে ইরাকের বসরা শহরে খুঁজে পেলাম। শিয়া সুন্নী দুটি গ্রুপে বিভক্ত ছিল শহরটির জনগণ। এ শহরে খ্রিষ্টান সহ বিভিন্ন ভাষাভাষীর লোক বসবাস করতো।
শিয়া সম্পর্কে একটু আলোকপাত করা যাক।
শিয়ারা বলে, তারা আলী বিন আবু তালিবকে অনুসরণ করে যিনি ছিলেন মুহাম্মাদ আলাইহিস সালামের কন্যা ফাতেমার স্বামী এবং একই সাথে মুহাম্মাদ আলাইহিস সালামের চাচাতো ভাই। তারা বলে, মুহাম্মাদ আলাইহিস সালাম আলীকে খলীফা হিসেবে সফল করে তোলার জন্য আলী এবং ১২ জন ইমামকে নিযুক্ত করেছিলেন।
আমার মতে, আলী, হাসান এবং হুসাইনের খেলাফত প্রতিষ্ঠার ক্ষেত্রে শিয়ারা সঠিক পথেই ছিল। কারণ, ইসলামের ইতিহাস সম্পর্কে আমি যতটকু জানি, আলী একজন ব্যতিক্রমধর্মী চরিত্রের লোক ছিলেন যা খেলাফতের জন্য জরূরী ছিল।
প্রফেটহুড (নবী হওয়া) বিষয়টি খ্রিষ্টানদের নিকট বরারাবরই সন্দেহজনক বিষয়। মুসলমানরা বলে, মুহাম্মাদের নবী হওয়ার বিষয়ে অনেক প্রমাণ রয়েছে। তন্মধ্যে একটি হচ্ছে কোর'আন। আমি কোর'আন পড়েছি। সত্যিই এটা উচুমানের একটি বই। এমনকি তাওরাত এবং বাইবেল থেকে ও উচুমানের। কারণ এর মধ্যে রয়েছে সুস্পষ্ট নীতিমালা এবং নীতি নৈতিকতার দিক নির্দেশনা।
এটা আমাকে অবাক করেছে যে, মুহাম্মাদের ন্যায় একজন অশিক্ষিত লোক কীভাবে এমন এক কিতাব নিয়ে আসলেন, কীভাবে এমন এক লোকের মধ্যে নৈতিকতা, মেধা, এবং ব্যক্তিগত চরিত্রে সমাহার ঘটেছিল যা একজন লোকের পক্ষে খুব বেশী পড়াশুনা ও ভ্রমণ করে ও সম্ভবপর হয়না। আমি ভাবছিলাম, এগুলো কি মুহাম্মাদের নবী হওয়ার ক্ষেত্রে প্রমাণ হতে পারে?
আমি সদা চেস্টা করছিলাম মুহাম্মাদ আলাইহিস সালাম সম্পর্কে সত্য উদ্ঘাটনের। একবার আমি লন্ডনের এক প্রিস্টের কাছে আমার ইন্টারেস্ট প্রকাশ করেছিলাম। তার উত্তরটি ছিল গোড়ামীতে পূর্ণ। সে আমাকে আদৌ বুঝাতে সক্ষম হয়নি। আমি যখন তুর্কীতে ছিলাম, আহমেদ ইফেন্দীকে এ বিষয়ে কয়েকবার প্রশ্ন করেছিলাম কিন্তু সন্তোষজনক কোন উত্তর পাইনি। সত্যি কথা বলতে কি, আমি তাকে সরাসরি এ ব্যাপারে কোন প্রশ্ন করিনি এ ভয়ে যে না জানি তিনি আমাকে কোন প্রকার সন্দেহ করে ফেলেন।

আমি গভীর ভাবে চিন্তা করছি মুহাম্মাদ আলাইহিস সালামকে নিয়ে। খ্রিষ্টান হিসেবে আমি এখনও প্রফেটহুড বিশ্বাস করিনা সত্য, তবে তিনি যে সত্যিকারের একজন জিনিয়াস ছিলেন, এ ব্যাপারে কোন সন্দেহ নেই।
সুন্নীদের ব্যাপারে কিছু বলা যাক,
নবীর মৃত্যুর পর মুসলমানগণ আবু বকর, উমার, উছমান, এবং আলীকে খেলাফতের জন্য যোগ্য মনে করেছিল। এ ধরণের বিতর্ক সকল ধর্মে ই বিদ্যমান। বিশেষ করে খ্রীস্টান ধর্মে বেশী বিদ্যমান। উমার এবং আলীর মৃত্যু থেকে নিয়ে আজ অবধি চলা এ বিতর্ক ভাল কিছু বয়ে নিয়ে আসেনি। আমি মনে করি, যদি মুসলমানগণ সত্যিকার অর্থে যুক্তিপরায়ণ হয়ে থাকে, তাহলে পুরানো দিনের চিন্তা ছেড়ে দিয়ে তাদের বর্তমান নিয়ে ভাবা উচিত।
একদিন আমি মিনিস্ট্রীতে শিয়া ও সুন্নীদের মধ্যকার বিরোধ নিয়ে কথা বলতে গিয়ে বলেছিলাম,
" যদি মুসলমানগণ জীবনের সঠিক কনসেপ্টটি জানতো, তবে তারা শিয়া সুন্নী বিরোধ মিঠিয়ে ফেলে এক প্লাটফর্মে চলে আসতো।"
কেউ একজন তখন আমাকে বাধা দিয়ে বলেছিল,
" হেম্পার, তোমার কাজ হচ্ছে তাদের মধ্যকার বিরোধকে খেপিয়ে তোলা, তাদের একত্রীকরণের চিন্তা করা নয়।"
ইরাক যাওয়ার পূর্বে সেক্রেটারী আমাকে বলেছিলেন,
"হেম্পার, তোমার জানা উচিত যে, সৃষ্টির আদি থেকে মানুষের মধ্যে বিরোধ চলে আসছে। এটা মেসায়াহ আসা পর্যন্ত চলবে। তোমার কাজ হচ্ছে, এ বিরোধগুলোকে ভালভাবে পর্যবেক্ষণ করা এবং মিনিস্ট্রীতে রিপোর্ট দেয়া। মুসলমানদের মধ্যে চলমান বিরোধের যতই তুমি অবনতি ঘটাতে পারবে, ততই ইংল্যন্ডের প্রতি তোমার সেবা মহান থেকে মহানতর হয়ে উঠতে থাকবে।"
তিনি আরও বলেছিলেন,
" এ ক্ষেত্রে তোমার প্রথম কাজ হবে প্রশাসনের বিরুদ্ধে জনগণকে উস্কিয়ে দেয়া। ইতিহাস বলছে, সকল প্রকার বিপ্লবের মুল সুত্র হচ্ছে জনগণের বিদ্রোহ। যখন মুসলমানদের ঐক্য ভেঙ্গে যাবে, তখন তাদের একে অপরের প্রতি সহানুভূতি ও সমবেদনা প্রকাশ বিলুপ্ত হয়ে যাবে। এটা তারা একদম ভুলে যাবে। তাদের শক্তি তখন দুর্বল হয়ে পড়বে , আর এভাবেই আমরা তাদেরকে অতি সহজেই ধ্বংস করতে সক্ষম হব।

বসরায় এসে পৌঁছলাম। একটি মসজিদে সেটল্ড হলাম। মসজিদের ইমাম উমার তাঈ ছিলেন আরব বংশদ্ভোত সুন্নী মুসলিম। তাঁর সাথে সাক্ষাত হল। প্রথমে তিনি আমাকে সন্দেহ করলেন। এক গাঁদা প্রশ্ন করলেন। আমি উত্তরগুলো মেনেজ করার আপ্রাণ চেস্টা করলাম, যেমন, আমি তুরস্কের ইগদীর এলাকা থেকে এসেছি।ইস্তামবুলের আহমেদ ইফেন্দীর অনুসারী।
আমি তাকে আরও কিছু তথ্য দিলাম। তুর্কী ভাষায় কথা বললাম।
ইমাম তখন উপস্থিত জনতার একজনকে চোখ দিয়ে ইশারা করলেন, বুঝালেন, আমি ঠিকভাবে তুর্কী ভাষায় কথা বলছিলাম কি না? পজিটিভ উত্তর আসল।
ইমামকে কব্জা করতে পেরে আমি খুবই আনন্দিত হলাম। কিন্তু দিন কয়েক পর হতাশার সাথে লক্ষ করলাম, ইমাম আমাকে একজন তুর্কী গুপ্তচর হিসেবে সন্দেহ করছেন।
আমি লক্ষ করলাম, সুলতান কর্তৃক নিয়োজিত বসরার গভর্নরের সাথে উনার বিরোধ রয়েছে।
মসজিদ ত্যাগ করতে বাধ্য হলাম। একটি সরাইখানায় রুম ভাড়া করে সেখানে চলে গেলাম। সরাইখানার মালিক মুর্শিদ ইফেন্দী ছিল একটা ইডিয়ট। প্রতিদিন ভোরে ফজরের আযান হওয়ার সাথে সাথে দরজায় নক করে প্রচন্ড বিরক্ত করত। কী আর করব? তাকে মেনে চলা ছাড়া কোন উপায় ছিলনা। বাধ্য হয়েই প্রতিদিন ভোরে ঘুম থেকে উঠতাম এবং ফজরের নামায আদায় করতাম। শুধু এতেই রেহাই পেতাম না, প্রতিদিন সে এসে বলত,
"তুমি নামায পর কোর'আন তেলাওয়াত করবে।"
আমি তাকে বলতাম,
"দেখ, কোর'আন তেলাওয়াত করা ফরয কিছু না।"
আমি তাকে জিজ্ঞেস করতাম,
'আচ্ছা, বলতো, তুমি আমাকে এত চাপ দিচ্ছ কেন?'
সে জবাব দিত,
"দেখ, দিনের বেলা ঘুমালে দরিদ্রতা এবং অকল্যাণ এসে ভর করে, আর এটা আমার সরাইখানা এবং এখানকার বাসিন্দাদের উপর প্রভাব ফেলবে।"
আমাকে সরাইখানা থেকে বের করে দেবে, এই ভয়ে আমি বাধ্য হয়ে তার কথা মেনে চলতাম। প্রতিদিন আমি ফজরের নামায আদায় করতাম এবং এক ঘন্টা কোর'আন তেলাওয়াত করতাম।
একদিন পাঁজি মুরশেদ এসে বলল,
"এই, দেখ, তুমি আমার এখানে আসার পর থেকে আমার ভাগ্য পুড়েছে, কারণ তোমার তো বউ নেই। বিয়ে করনি। এখন তোমার সামনে দুটি পথ রয়েছে, হয় বিয়ে করবে, নয়তো সরাইখানা ছাড়বে।"
আমি তাকে বললাম,
"দেখ, আমি কীভাবে বিয়ে করব? আমার তো কোন সহায় সম্বল নেই।"
একই সমস্যায় পড়েছিলাম ইস্তামবুলে। তখন আহমেদ ইফেন্দীকে বলেছিলাম, আমার বিয়ে করার মত ইয়ে--- নেই। কিন্তু একথা এখানে বলার সাহস করলাম না। ভাবলাম, এই পাঁজিটা যে চরিত্রের, এটা শুনে আমার প্যান্ট খুলে ন্যাংটা করে আমার কথা যাচাই করা শুরু করে দিবে।

মুরশেদ ইফেন্দী বলল,
"হায় আল্লাহ, তোমার ঈমান তো সাংঘাতিক দুর্বল। তুমি কি কোর'আনে পড় নাই, আল্লাহ বলেছেন, যদি তারা দরিদ্র হয়, আল্লাহ তাদেরকে তাঁর রহমত দ্বারা ধনী করে দেন।"
আমি একটু থতমত খেলাম। শেষমেষ বললাম,
"ঠিক আছে। আমি বিয়ে করব। তুমি কি আমাকে টাকা দিতে রাজী আছ, অথবা পারবে কি তুমি একটি মেয়ের সন্ধান দিতে যাকে অল্প টাকা দিলেই হয়ে যাবে?"
কিছুক্ষণ নীরবতা। অবশেষে মুরশিদ ইফেন্দী বলল,
'আই ডোন্ট কেয়ার, পারলে রজব মাসে বিয়ে কর, নতুবা সরাইখানা ছাড়"।
রজব মাস আসার আর মাত্র ২৫ দিন বাকী। সম্ভব নয়। চাকরি খুঁজলাম। অবশেষে এক কাঠ মিস্ত্রীর সহকারী হিসেবে চাকরী পেয়ে সরাইখানাটি ছড়লাম। বেতন ছিল খুবই অল্প। কিন্তু থাকা খাওয়া ছিল মালিকের অধীনে। রজব মাসের আগেই তল্পিতল্পা সহ কাঠ মিস্ত্রীর দোকানে গিয়ে উঠলাম। কাঠ মিস্ত্রীর নাম ছিল আব্দুর রিদা। লোক হিসেবে সে ভাল ছিল। আমাকে ছেলের মত মনে করতো। সে ছিল এক জন শিয়া। ইরানের খোরাসানে তাঁর জন্ম।
যাই হোক, এখানে থাকার সুবাদ আমি ফার্সি ভাষা ভাল করে শেখা শুরু করলাম। প্রতিদিন বিকেলে ইরানী শিয়ারা এখানে এসে জমায়েত হত এবং রাজনীতি ও অর্থনীতি সহ বিভিন্ন বিষয়ে আলাপ আলোচনা করত। তবে সরকার এবং ইস্তাম্বুলের খলীফা নিয়ে খুব অল্প কথা বলত। অপরিচিত কেউ আসলে চট করে আলোচনার মোঢ় ঘুরিয়ে ব্যক্তিগত বিষয় নিয়ে কথা বলা শুরু করে দিত।
তারা আমাকে বিশ্বাস করেছিল মনে প্রাণে। কারণ তারা আমাকে আজারবাইজানের লোক হিসেবে মনে করেছিল। আমি তখন তুর্কী ভাষায় কথা বলতাম।
বিভিন্ন সময় একটি যুবক আমাদের দোকানে আসা যাওয়া করতো। যুবকটির মধ্যে ছিল বৈজ্ঞানিক বৈজ্ঞানিক ভাব। সে আরবী, ফার্সি, এবং তুর্কী ভাষা জানতো। লোকটির নাম ছিল, মুহাম্মাদ বিন আব্দুল ওয়াহহাব নজদী।
চলবে-


ref: https://www.facebook.com/photo.php?fbid=398778460304879&set=a.260763954106331.1073741827.100005181848831&type=1&permPage=1

লা-মাযহাবী, ওয়াহাবীদের প্রতিষ্ঠাতা গুরু মুহাম্মদ বিন আব্দিল ওয়াহাব নজদীর ব্রিটিশ এজেন্ট হওয়ার নেপথ্যে চাঞ্চল্যকর কাহিনীঃ



মুহাম্মদ বিন আব্দিল ওয়াহাব নজদীর
লা-মাযহাবী, ওয়াহাবীদের প্রতিষ্ঠাতা গুরু মুহাম্মদ বিন আব্দিল ওয়াহাব নজদীর ব্রিটিশ এজেন্ট হওয়ার নেপথ্যে চাঞ্চল্যকর কাহিনীঃ
 প্রারম্ভিকাঃ
গুপ্তচর হ্যাম্পার একজন ব্রিটিশ গুপ্তচর। সিরিয়া, ইরাক, ইরান, হিযায এবং ইস্তাম্বুলে মুসলমানদের মধ্যে বিভ্রান্তি ও অনৈক্য সৃষ্টিতে ব্রিটিশ সরকার তাকে বিশেষভাবে নিয়োগ দিয়েছিল । এই মিশন চলাকালীন সময় ওয়াহাবী সম্রাট মুহাম্মাদ বিন আব্দিল ওয়াহাব নামক এক লোকের সাথে পরিচয় ঘটেছিল। লোকটার গতিবিধি দেখেই হ্যাম্পার বুঝতে পেরেছিল, এই শিকার ধরতে পারলে মানে একে ব্রিটিশ এজেন্ট বানাতে পারলে আমার মিশন সফল। হ্যাম্পার শিকার বধে সর্বশক্তি নিয়োগ করলো এবং অবশেষে খুব ভালভাবেই সে সফল হলো।
তাহলে ঘটনাটি কী? কী ঘটেছিল?
লামাযহাবীদের শায়েখ তাহলে ব্রিটিশদের এজেন্ট!!!!!!
কীভাবে?
গুপ্তচর নিজেই এ চাঞ্চল্যকর তথ্য ফাঁস করেছে তার confessions of a British spy Hamper নামক আর্টিকেলে। এখানে আর্টিকেলটির সম্পূর্ণ হুবহু অনুবাদ না করা হলেও প্রাসঙ্গিক মূল বিষয়গুলো যথাযথভাবে তোলে ধরার চেস্টা করা হয়েছে।
জানতে হলে শুধু এক পর্ব পড়লেই হবেনা। সবগুলো পড়তে হবে।
তাই, আমাদের সাথে থাকুন, পড়ুন, শেয়ার করে অন্য ভাইকে জানতে দিন। সিরিয়াস।
----------------

পর্ব এক
_________________________________________
গুপ্তচর হেম্পার বলছে,
আমাদের গ্রেট ব্রিটেনের পরিসর হচ্ছে বিশাল। সাগর থেকে সূর্য উদিত হয় আবার সাগরে অস্ত যায়। ইন্ডিয়া, চীন এবং মধ্যপ্রাচ্যের সাথে পারস্পরিক সম্পর্কের বেলায় আমাদের স্টেট নিতান্তই দুর্বল। কারণ এই দেশগুলো এখনও আমাদের পুরো কর্তৃত্বে আসেনি। তো যাই হোক, আমরা কিন্তু এই সব এলাকার জন্য খুবই সফল কিছু পরিকল্পনা নিয়ে এগুচ্ছি। শীঘ্রই আমরা এদেরকে আমাদের কব্জায় নিয়ে আসব। আমাদের দুটি গুরুত্বপূর্ণ কাজ আছেঃ
১-যে এলাকাগুলো আমরা ইতমধ্যে দখল করেছি, সেগুলো নিয়ন্ত্রণ করা
২- যেগুলো এখন ও নিয়ন্ত্রণে আসে নি, সেগুলোকে আয়ত্তে নিয়ে আসার চেষ্টা করা।
এ সংক্রান্ত বিষয়ে মন্ত্রণালয় একটি কমিশন করল। আমাকে বিশ্বাস করে ইস্ট ইন্ডিয়ার এডমিনিস্ট্রেটর বানানো হল। বাহ্যত এটি একটি ব্যবসা কম্পানী হলে ও মূলত এর প্রধান কাজ ছিল ভারতকে কব্জা করার কৌশল বের করা। আমাদের সরকার ভারতের ব্যাপারে মোটেও নার্ভাস ছিলনা এজন্য যে এখানকার জনগন বিভিন্ন জাতীয়বাদের, বিভিন্ন ভাষার। তাদের মধ্যে একসাথে বসবাস করার ক্ষেত্রে কন্ট্রাস্ট আছে। মানে এরা ঐক্যবদ্ধ নয়। আমাদের সরকার চীনের ব্যাপারে চিন্তিত নয়, কারণ এদের প্রধান ধর্ম হচ্ছে বুদ্ধিজম এবং কনফুসিয়াজম। এদের কোনটাই হুমকির কারণ নয়। উভয়টি ই মৃত ধর্ম, যাতে জীবনের প্রতি কোন উৎসাহ নেই। সুতরাং এ দুটু দেশের ব্যাপারে ব্রিটিশ সরকারের কোন মাথা ব্যথা নেই। তারা চিন্তিত ও নয়। কিন্তু ভবিষ্যতে যে কিছু ঘটবেনা, এটা ও আমরা মনে করতাম না বিধায় আমরা একটি সুদুর প্রসারী পরিকল্পনা হাতে নিয়েছিলাম।
যেটি আমাদেরকে বেশী ভাবিয়ে তোলেছিল সেটা ছিল, মুসলিম দেশগুলো। ইতোমধ্যে অসুস্থ লোকের সাথে (অটমান এম্পায়ার) আমাদের বেশ কিছু চুক্তি আমাদের সুবিধার দিক বিবেচনায় হয়েছিল। আমাদের মন্ত্রণালয়ের অভিজ্ঞ অফিসাররা ভবিষ্যৎবাণী করেছিলেন, এই সুস্থ লোকটি (অটমান এম্পায়ার) এক শতাব্দীর ভিতরেই মারা যাবে। তাছাড়া আমরা ইরান সরকারের সাথে এমন কিছু গোপন চুক্তি করেছিলাম যা তাদের মেরুদন্ড ভেঙ্গে দিতে পারে। কিন্তু এত কিছুর পর ও আমাদের শান্তি ছিলনা, কারণ, আমরা এগুলো থেকে প্রত্যাশিত ফলাফল পাচ্ছিলাম না। এর পিছনে কতগুলো কারণ ছিল যা আমি নীচে উল্লেখ করছিঃ

কারণগুলো হচ্ছে,
১- মুসলমানরা সাংঘাতিকভাবে ইসলামের প্রতি নিবেদিত প্রাণ। প্রতিটি মুসলমান ইসলামের সাথে শক্তভাবে সম্পৃক্ত। এক্ষেত্রে প্রতিটি মুসলমানকে তুলনা করা চলে ঐ সকল প্রিস্টদের মত, যারা খ্রিষ্টান ধর্মের জন্য প্রাণ দিতে প্রস্তুত থাকে। মারা যাবে তবু ধর্ম ছাড়বে না। বেশী বিপদজনক মুসলিম হচ্ছে ইরানের শিয়ারা। কারন তারা যারা শিয়া নয় তাদেরকে বিধরমী ও ফাউল বলে থাকে। তাদের কাছে খ্রিস্টানরা ক্ষতিকর আবর্জনা ছড়া আর কিছু নয়। আমি একবার এক শিয়া কে জিজ্ঞাসা করলাম, আচ্ছা তোমরা কেন খ্রিস্টানদেরকে এমন মনে কর?
সে জবাব দিল, দেখ, ইসলামের নবী একজন মহান লোক ছিলেন। তিনি খ্রিস্টানদেরকে এক ধরণের আধ্যাত্মিক চাপের মধ্যে রেখেছিলেন যাতে তারা সঠিক পথের দিশা পেতে পারে। মূল বিষয় হল, এটি একজন বিপদজনক লোককে বশে আনার পলিসি ছাড়া কিছু নয়। এখানে যে আবর্জনার কথা বলা হচ্ছে, এটা জাগতিক কোন ব্যাপার নয়। এটি একটি আধ্যাত্মিক ব্যাপার।এটা শুধু খ্রিস্টানদেরকেই বলা হয় না, বরং এটা সুন্নী এবং সকল অমুসলিমদেরকেও বলা হয়ে থাকে।
আমি তাকে বললাম, ভাল, সুন্নী এবং খ্রিস্টানরা তো আল্লাহ, নবীগণ এবং পরকালকে বিশ্বাস করে, তবুও কেন তোমরা তাদেরকে ফাউল বল?
সে জবাব দিল, এরা ফাউল দুটি কারণেঃ
১- সুন্নীরা আমাদের নবীর ব্যাপারে মিথ্যা কথা বলে।
২- খ্রিস্টানরা নবীদের ব্যাপারে অভিযোগ করে, যেমন ঈসা আলাইহিস সালামের ব্যাপারে বলে, যে তিনি মদ খেয়ে মাতাল থাকতেন।
আমি তাকে বললাম, না, খ্রিস্টানরা এ রকম কথা বলে না। লোকটি জবাব দিল, হা, তারা এরকম ই বলে, তুমি বিষয়টি জাননা। এটা বাইবেলে লেখা আছে।
আমি চুপ হয়ে গেলাম। এ ব্যাপারে আর কথা বাড়াতে চাইলাম না। কারণ সে আমাকে সন্দেহের চোখে দেখতে পারে। তাই তাঁর কথাগুলো এড়িয়ে গেলাম। বুঝতে পারলাম, এদের সাথে ডিবেইট করতে হলে অনেক কৌশলী হতে হবে।
২- ইসলাম একসময় একটি অথরিটেটিভ ধর্ম ছিল। মুসলমানরা অনেক সম্মানিত ছিল। কিন্তু এখন তাদেরকে ইচ্ছা থাকলেও বলা খুবই কঠিন যে, তোমরা যে সম্মান ও মর্যাদা এক সময় অর্জন করেছিলে, সেটা কতক অনুকুল পরিবেশের কারণেই সম্ভব হয়েছিল। সেই দিন আর এখন নেই। এমন দিন তোমাদের জন্য আর কখনও আসবেন না।
৩। আমরা মুসলিম স্কলারদের ব্যাপারে খুবই আন ইজি অনুভব করি। কারণ এরা ই আমাদের পরিকল্পনা বাস্তবায়নের ক্ষেত্রে সব চেয়ে বড় বাধা। কারণ এরা এমন লোক, যারা তাদের নীতির ব্যাপারে আপোষ করে না। এরা ক্ষণস্থায়ী ভোগ বিলাস থেকে বিমুখ এবং কুর'আন কারীমে বর্ণিত বেহেশ্তের প্রতি উন্মুখ। লোক জন তাদেরকে অনুসরন করে। এমন কি বাদশাহ পর্যন্ত তাদেরকে ভয় পায়। সুন্নীরা অবশ্য এত কট্টর নয় যেমন শিয়ারা। কারণ শিয়া লোকজন বই পড়েনা। তারা তাদের স্কলারদেরকে শুধু আনুসরন করে প্রতিটি বিষয়ে।
এ সকল বিষয়কে সামনে রেখে আমরা বিভিন্ন কনফারেন্স এর নিয়মিত আয়োজন করলাম।

আমরা এ ব্যাপারে সিরিজ কনফারেন্সের প্রস্তুতি নিলাম। কিন্তু প্রতিবারই শুধু হতাশা আর হতাশা। পথ যেন আমাদের জন্য বন্ধ হয়ে ই আছে। প্রতিটি গোয়েন্দা রিপোর্টে শুধু ই ফ্রাশটেইশন। কিন্তু আমরা হাল ছাড়লাম না। আমরা এমন ধরণের লোক যারা ধৈর্য ধরে গভীর শ্বাস প্রশ্বাস নেয়ার অভ্যাস ডেভেলাপ করেছিলাম।
মিনিস্টার স্বয়ং এবং আরও কিছু স্পেশালিষ্ট আমাদের কনফারেন্সে উপস্থিত হয়েছিলেন। আমরা মোট ২০ জন ছিলাম। ৩ ঘন্টা ব্যাপী আলোচনা চলল। না , কোন ফলাফল নেই। সিদ্ধান্ত ছাড়াই কনফারেন্সের ইতি টানা হল।
তবু একজন প্রিস্ট বললেন। চিন্তার কোন কারণ নেই। মাসায়াহ অজানা জগত থেকে আমাদের উপর তাঁর একটি চোখ সব সময় রাখবেন। আমাদের যা করতে হবে, তা হল, আমাদের নিজেদেরকে শক্তিশালী করতে হবে, মোড়লগিরি ধরে রাখতে হলে মিডিয়া কন্ট্রল করতে হবে। সম্ভাব্য সকল মেথড ফলো করতে হবে। মুসলমানদের মধ্যে খ্রিস্টান ধর্ম প্রচার করতে হবে।
আরেকটি কনফারেন্স।
ইংল্যান্ড, ফ্রান্স এবং রাশিয়া - এ তিনটি দেশ থেকে বিভিন্ন ডিপ্লমেট এবং ধর্মীয় ব্যক্ত্ববর্গ এ কনফারেন্সে উপস্থিত হলেন। আমার ভাগ্য ভাল ছিল। আমিও এ কনফারেন্সে উপস্থিত ছিলাম, কারন আমার সাথে মন্ত্রীর ভাল সম্পর্ক ছিল। এ কনফারেন্সে আলোচনা হল কীভাবে মুসনমানদের মধ্যে বিভিন্ন গ্রুপ তৈরী করা যায় এবং তাদেরকে কীভাবে খ্রিষ্টান বানানো যায়। কিন্তু এ কনফারেন্সে ও প্রত্যাশা মোতাবেক ফলাফল আসলনা। আর হাঁ,এ কনফারেন্সে কী কী আলোচনা হয়েছিল তা আমি আমার গ্রন্থ "Ilaa Melekoot-il-Meseeh." এর মধ্যে লিপিবদ্ধ করেছি।

একটি বৃক্ষকে উপড়ে ফেলা, যার শিকড় পৃথিবীর গভীরে চলে গেছে- এটা খুবই কঠিন কাজ। কিন্তু আমরা এটাকে অবশ্যই পানিভাত করে ফেলব। খ্রিষ্টান ধর্ম এসেছে নিজেকে ছড়িয়ে দিতে, আমাদের লর্ড জীসাস আমাদেরকে অনুমতি দিয়েছেন। ভাবনার বিষয় ছিল যে, ইস্ট এবং ওয়েস্ট মুহাম্মাদকে সহায়তা করেছিল।এখন আর এটা নেই। সখ্যতা দূর হয়ে যাচ্ছে। আমরা আনন্দের সাথে লক্ষ্য করেছি, পরিস্থিতি সম্পূর্ণ রূপে বদলে গেছে। আমাদের মিনিস্ট্রির আপ্রাণ প্রচেস্টায় এবং অন্যান্য খ্রিষ্টান সরকারের প্রচেস্টায় মুসলমানরা এখন ধংসের পথে। আর খ্রিষ্টান ধর্মের হচ্ছে প্রতিনিয়ত উত্তরণ। এখন আমাদের সময় এসেছে, শতাব্দীর পর শতাব্দী আমরা যে সকল এলাকা হারিয়েছিলাম, সেগুলোর উপর পুণঃনিয়ন্ত্রণ করা।
১৭১০ সালে উপনিবেশবাদের মন্ত্রণালয় আমাকে মিশর, ইরাক, হিজাজ এবং ইস্তাম্বুল পাঠাল। আমি গুপ্তচরগিরী করব এ উদ্দেশ্যে। আমার কাজ ছিল, মুসলমানদের মেরুদন্ড ভেঙ্গে দেয়ার প্রয়োজনীয় তথ্য উপাথ্য সংগ্রহ করা। আমি ছাড়াও আরও ৯ জনকে নিয়োগ দেয়া হল। এক ই কাজে, এক ই সময়ে। আর মিশন সফল করতে আমাদেরকে বিশেষ বিশেষ কিছু নামের তালিকা প্রদান করা হল।
আমি সেক্রেটারী জেনারেলকে নিশ্চিন্ত করলাম, "আই উইল নেভার ফরগেট।"
তিনি বললেন, জেনে রাখ, "আমাদের ভবিষ্যৎ সফলতা সম্পূর্ণভাবে নির্ভর করছে তোমাদের উপর।"
আমি প্রথম মনস্থ করলাম, ইস্তাম্বুল যাব। মুসলমানদের ঐতিহ্যের একটি প্রাণকেন্দ্র। আর আমাকে সে জন্য তুর্কী ভাষা শিখতে হয়েছিল। আমি লন্ডনে থাকা কালীন সময়ে টারকিশ, এরাবিক, ফার্সি, ভাষা শিখে ফেলেছিলাম। যদিও পুথিগত শিক্ষা অনেক ক্ষেত্রে আঞ্চলিক ভাষা থেকে ভিন্ন। আর সে জন্য আমি বিশেষ করে ইস্তাম্বুলের আঞ্চলিক ভাষা ও রপ্ত করেছিলাম, যাতে লোকজন আমাকে সন্দেহ করতে না পারে।
আমি কখন ও এ সন্দেহ করতাম না যে তারা আমাকে সন্দেহ করবে। কারন, আমি জানি, মুসলমানরা খুব ই উদার প্রকৃতির এবং পরোপকারী। এটা তারা তাদের নবীর কাছ থেকে শিক্ষা নিয়েছিল। তারা আমাদের ন্যায় সন্দেহপ্রবণ নয়। তাছাড়া ঐ সময় তুর্কী সরকারের পক্ষ থেকে গোয়েন্দা বিষয়ক কোন অরগেনাইজেশন ও ছিলনা।
চলবে-

____________________________________________________________
(সম্পূর্ণ কাহিনী জানতে হলে প্রতিটি পর্ব পড়তে হবে। তাই অনুগ্রহপূর্বক সাথে থাকুন।)

ref: https://www.facebook.com/photo.php?fbid=398287697020622&set=a.260763954106331.1073741827.100005181848831&type=1



মঙ্গলবার, ১৭ ফেব্রুয়ারী, ২০১৫

বেহেশতে জান্নাতি নারীর হুর পাওয়া প্রসঙ্গেঃ

আমাদের প্রশ্ন জাগতেই পারে যে পুরুষেরা যেহেতু জান্নাতে নারী হুর পাবে তাহলে নারীরা জান্নাতে গেলে কি পাবে।??
আল্লাহ পাক আল কুরআনে এরশাদ করেন ,
যে লোক পুরুষ হোক কিংবা নারী, কোন সৎকর্ম করে এবং বিশ্বাসী হয়, তবে তারা জান্নাতে প্রবেশ করবে এবং তাদের প্রাপ্য তিল পরিমাণ ও নষ্ট হবে না। [সুরা নিসা: ১২৪]
এবার প্রশ্নঃ
আল্লাহ পুরুষ দের কে ডাগর আঁখি বিশিষ্ট হুর , এবং অপরুপা নারী এর কথা বলে জান্নাতের প্রতি অনুপ্রাণিত এবং আগ্রহি করেছেন কিন্তু নারীদেরকে এরকম প্রলুব্ধকর কিছুই বলেন নি কেন ???
জবাবঃ
প্রথম ব্যাপার , আল্লাহ পাক বলেন ,
তিনি যা করেন, তৎসম্পর্কে তিনি জিজ্ঞাসিত হবেন না বরং তাদেরকে জিজ্ঞেস করা হবে। [সুরা আম্বিয়া: ২৩]
তবে শরীয়তের সুনির্দিষ্ট কথাই ইসলামের মূলনীতি অনুসারে হিকমত অনুধাবনের মানসিকতা থাকা কোন দোষের ব্যাপার নয় ।
দ্বিতীয় ব্যাপারঃ
নারীদের কে পুরুষ হুর এর কথা উল্লেখ করলে নারীরা নিজেই আল কুরআনে এই লেখা পড়ে লজ্জিত হতো ।
তৃতীয় দিকঃ
নারীরা যেহেতু একই স্থান, কাল ও পাত্রে একটি মাত্র সন্তান জন্ম দিতে পারে এবং পুরুষ যেহেতু একাধিক জন্ম দেয়ার ক্ষমতা রাখে সেহেতু পুরুষকেই সাধারণত বহুগামী হতে দেখা যায়।
আর নারীর প্রতি নরের যেই আকর্ষণ , নরের প্রতি নারীর আকর্ষণ ঠিক তেমনটি নয় । যার কারনে আল্লাহ জান্নাতে নারীর কথা বলে নরকে আগ্রহী করেছেন , কিন্তু নারীর ক্ষেত্রে নীরবতা পালন করেছেন।
সর্বশেষ ব্যাপারঃ
আল্লাহ পাক স্ত্রীদের কথা উল্লেখ করেছেন স্বামীদের জন্য , কারন স্বামী ই হোল স্ত্রি এর প্রতি মোহিত এবং তার কামনাকারী ।এজন্যই জান্নাতে নারীর কথা বলে পুরুশদের আগ্রহী করা হয়েছে কিন্তু নারীদের ব্যাপারে নীরব থাকা হয়েছে। কিন্তু এর মানে এই নয় যে তাদের স্বামী থাকবে না বরং তাদেরও স্বামী থাকবে আদম সন্তানদের মধ্য থেকে।
এবার প্রশ্নঃ যে নারী বিয়ের আগেই মারা গেছেন জান্নাতে তার কি হবে? তাকে কার সাথে বিয়ে দেওয়া হবে?
জবাবঃ যে মহিলার বিয়ে হয়নি, তাহলে তার জন্য অনুমতি আছে, সে ইচ্ছে করলে জান্নাতী কোন অবিবাহিত পুরুষকে বিয়ে করতে পারবে। আর না চাইলে পুরুষ হুর আল্লাহ তাআলা সৃষ্টি করে তার সাথে বিয়ে করিয়ে দিবেন। ।
আবু হুরায়রা (রা) হতে বর্ণিত
‘কেয়ামতের দিন যে দলটি প্রথম জন্নাতে প্রবেশ করবে,তাদের চেহারা হবে পূর্ণিমার চাঁদের মত উজ্জ্বল; আর তৎপরবর্তী দলের চেহারা হবে আসমানে মুক্তার ন্যায় ঝলমলে নক্ষত্রের মতো উজ্জ্বল। তাদের প্রত্যেকের থাকবে দু’জন করে স্ত্রী যাদের গোশতের ওপর দিয়েই তাদের পায়ের গোছার ভেতরস্থ মজ্জা দেখা যাবে। আর জান্নাতে কোনো অবিবাহিত থাকবে না।’ [মুসলিম : ৭৩২৫]
২য় প্রশ্নঃ কোন নারীর স্বামী যদি জাহান্নামী হয় তাহলে সে নারীর কি জান্নাতী‘হুর (পুরুষ)’ থাকবে??? তার স্বামী যদি কোন সময় জাহান্নাম থেকে
মুক্তি পেয়ে জান্নাতি হয় তাহলে সে কি তার দুনিয়ার স্ত্রীর সাথে মিলিত
হবে?
জবাবঃ
জাহান্নাম থেকে মুক্তির পর স্বামীর সাথে মিলিত হবে জান্নাতী স্ত্রী। আর যদি স্বামী চিরস্থায়ী জাহান্নামী হয়, তাহলে তার এখতিয়ার থাকবে, সে ইচ্ছে করলে অবিবাহিত জান্নাতী পুরুষও বিয়ে করতে পারে, অথবা পুরুষ হুরও বিয়ে করতে পারে।
সর্বশেষ বোনদের জন্য আমার কিছু কথাঃ
আপনি জান্নাতে হুর পাবেন নাকি পাবেন না তা কিন্তু খুব জটিল কোন বিষয় না কারন আল কুরআন এবং হাদিসে বার বার বলা আছে যে সেখানে আপনি যা চাইবেন তাই পাবেন ।
মনে রাখুন " যা চাইবেন তাই "
রাসূলুল্লাহ(সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন: আল্লাহ বলেন: আমি আমার নেক বান্দাদের জন্য এমন (নেয়ামতসমূহ) বানিয়ে রেখেছি যা কোন চোখ দেখে নাই এবং কোন কান শুনে নাই এবং কোন মানুষের অন্তরে যার চিন্তাও আসে নাই।
বুখারি শরিফ: ভলি:৯, বুক: ৯৩, নম্বর: ৫৮৯
মুসলিম শরিফ: বুক: ৪০, চ্যাপ্টার: ১, নম্বর ৬৭৮০, ৬৭৮১, ৬৭৮২, ৬৭৮৩
কেউ জানে না তাদের কৃতকর্মের জন্য কী কী চক্ষু-তৃপ্তিদায়ক প্রতিদান লুকায়িত আছে।[৩২:১৭]
তারা চিরকাল বসবাসরত অবস্থায় সেখানে যা চাইবে, তাই পাবে। [২৫:১৬]
আর যারা মুমিন ও সৎকর্মী, তারা জান্নাতের উদ্যানে থাকবে। তারা যা চাইবে, তাই তাদের জন্যে তাদের পালনকর্তার কাছে রয়েছে। এটাই বড় পুরস্কার। [৪২:২২]

 https://www.facebook.com/Allahr.Pothe.Mujahid/posts/493880017344312

SOCIALISM: MAKING EVERYONE EQUALLY POOR SINCE 1917

SOCIALISM: 
MAKING EVERYONE EQUALLY POOR SINCE 1917

SOCIALISM:
SOCIALISM: 
MAKING EVERYONE EQUALLY POOR SINCE 1917

বিবর্তনবাদ আর কত মানুষকে বোকা বানাবে?

বিবর্তনবাদ আর কত মানুষকে বোকা বানাবে?
বিবর্তনবাদ আর কত মানুষকে বোকা বানাবে?
বিবর্তনবাদ আর কত মানুষকে বোকা বানাবে?

মাতৃগর্ভে সন্তানের হাড় আগে হয় না মাংশ আগে ?

মাতৃগর্ভে সন্তানের হাড় আগে হয় না মাংশ আগে ?
মাতৃগর্ভে সন্তানের হাড় আগে হয় না মাংশ আগে ?

মোঘল সম্রাট বাহাদুর শাহ জাফর

মোঘল সম্রাট বাহাদুর শাহ জাফর 

মোঘল সম্রাট বাহাদুর শাহ জাফর
মোঘল সম্রাট বাহাদুর শাহ জাফর

সোমবার, ১৬ ফেব্রুয়ারী, ২০১৫

পিস্ টিভি রহস্স্য - কিভাবে শব্দের অর্থ অনুবাদের নামে বিকৃতি করা হয়?

আজকাল হাজার বছর পর ইসলাম রিসার্চ এর নামে শব্দের অর্থ অনুবাদের নামে বিকৃতি করার অপপ্রয়াস চালানো হচ্ছে।



পিচ্ টিভির রেফেরান্স করা উক্ত অনুবাদক মুহাম্মদ আসাদ, জন্ম ১৯০০ সনে, বর্তমান পোলান্ডের লেমবার্গ শহরে, এক ইহুদী রাব্বী বা পুরোহীত পরিবারে।
তাঁর স্ত্রী পোলা হামিদা আসাদকে নিয়ে প্রায় ২৬/২৭ বছর বাস করেছিলেন মরক্কোর তানজিয়ার্স শহরে। তিনি রাবেতা আলম ইসলামীর সঙ্গে চুক্তিবদ্ধ হয়েছিলেন কুরআনুল কারীমের একখানি সংক্ষিপ্ত তাফসীরসহ তরজমা করার জন্য। প্রথম দশ পারার তাফসীর প্রকাশিত হলে কোন কোন আলিম, তাঁর কোন কোন ব্যাখ্যা সম্পর্কে ভিন্নমত পোষণ করেন।
প্রায় সব অনুবাদকগণ হুর এর অর্থ করেছেন স্ত্রী লিঙ্গ। কিন্তু উনি বলছেন হুর মানে মহিলা বা পুরুষ হবে অথবা কোনো লিঙ্গ নেই।

তাই ওনার মতের বিপরীত অনুবাদকদের অনুবাদ উপস্থাপন করেনি।
পিচ্ টিভি সহি কোরান ও হাদিস ছাড়া কিছু মানা যাবেনা মুখে বল্লেও, ১৩০০ বছর পরে একজন আসাদ(ইহুদি বংশোদ্ভুত) ও ইউসুফ আলীর(শিয়া চিন্তা ধারার) নতুন মতামত কে গ্রহন করছে। এই সবই হচ্ছে "ইসলামিক রিসার্স" এর নামে! আসুন জানি এরা আসলে কারা?...
আসুন দেখি তার কিছু আকিদা
https://www.youtube.com/watch?v=IgXM33jRLKE

ভিডিওটি ডাউনলোড করে মোবাইলে প্রচার করুন!
ফেইসবুক এ শেয়ার করুন।
মহান আল্লাহ আপনার উত্তম প্রতিদান দিন!